করোনার চেয়ে অনাহারে মরবে বেশি মানুষ: অক্সফাম

করোনার চেয়ে অনাহারে মরবে বেশি মানুষ: অক্সফাম

মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণে চলতি বছরে গোটা বিশ্বে যত মানুষে মারা যাবে, তার চেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হবে ক্ষুধা কিংবা অনাহারে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম এমন আশঙ্কার কথা বলছে। অক্সফামের ওই প্রতিবেদনের বরাতে খবরটি জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

অক্সফাম বলছে, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে প্রভাবে আগামীতে খাদ্য সংকটে পড়ে বিশ্বে প্রতিদিন অনাহারে অন্তত ১২ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে। দাতব্য সংস্থাটি বলছে, এখনই বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া না হলে বিশ্বে করোনা মহামারির চেয়ে বেশি মানুষ মারা যেতে পারে খাদ্যের অভাবে বা অনাহারে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরে বিশ্বের সবচেয়ে গরিব প্রায় ১২ কোটি ২০ লাখ মানুষ অতিমাত্রায় দারিদ্র্য ও অনাহারে ভুগবে। এর ফলে দিনে অতিরিক্ত ১২ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে। এদিকে করোনায় সবচেয়ে বেশি একদিনে সর্বোচ্চ ১০ হাজার মানুষ মারা যাওয়ার রেকর্ড ছিল গত এপ্রিলে।

অক্সফাম বলছে, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনে গণহারে মানুষ বেকার হয়ে পড়েন। ফলে আয়-উপার্জনের পথ বন্ধ হয়েছে তাদের। খাদ্য উৎপাদনও ব্যাহত হয়েছে। অল্পসংখ্যক মানবিক সহায়তা সেই চাপ সামলাতে পারছে না। এর পুরো প্রভাব পড়েছে একেবারে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো জীবনে।

‘দ্য হাঙ্গার ভাইরাস’ শীর্ষক অক্সফামের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেন, আফগানিস্তান, সিরিয়া ও দক্ষিণ সুদানসহ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দরিদ্র অঞ্চলগুলোতে খাদ্য সংকট আরও বেড়েছে। এছাড়া কঙ্গো, ভেনেজুয়েলা, সাহেল, ইথিওপিয়া, সুদান, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া এবং হাইতির মতো দেশগুলোও রয়েছে।

প্রতিবেদনে ক্ষুধার উদীয়মান উপকেন্দ্রগুলোও তুলে ধরা হয়েছে। মধ্যম আয়ের দেশ যেমন ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিল— যেখানে মহামারির কারণে লাখো মানুষ না খেয়ে থাকার মতো পর্যায়ে এসে পড়েছে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইয়েমেনে ইতোমধ্যে মানবিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।

অক্সফাম প্রধান নির্বাহী ড্যানি শ্রীস্কান্দারাজাহ বলেন, ‘ করোনার প্রভাব যতটা না ভয়াবহ এর প্রভাব তার চেয়ে ভয়াবহ ও বিস্তৃত। এটা বিশ্বের লাখো দরিদ্র মানুষকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের গভীরে ঠেলে দিয়েছে। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকানো যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি ক্ষুধার হাত থেকে এসব মানুষকে বাঁচানোর দায়িত্বও সরকারগুলোর।’

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *