গোলাম কিবরিয়া, বার্তা সম্পাদক : নিম্নচাপের প্রভাবে ভারী বর্ষণে ভেসে গেছে বরগুনার পাথরঘাটার এক যুবকের অর্ধকোটি টাকার মাছ । ১৫ বছরের প্রবাসী জীবনের উপার্জন দিয়ে নিজ গ্রামে ৫ একর জমিতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মাছের ঘের । তার ঘেরে অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের পদ সৃষ্টি হয়েছিল। অনেকে উদ্ভুদ্ধ হয়েছিল মাছ চাষে। এখন সরকারি সহায়তা ছাড়া এসব মাছ চাষীদের ঘুরে দাঁড়াবার আর কোনো সুযোগ নেই।
পনের বছর প্রবাস জীবন পার করে গত বছরের প্রথম দিকে দেশে এসে প্রায় পাঁচ একর জমিতে প্রায় অর্ধকোটি টাকা খরচ করে মাছের ঘের তৈরি করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া ইউনিয়নের শিংড়াবুনিয়া গ্রামের রাসেল আহমেদ রনি। নিম্নচাপের প্রভাবে গত ২১ অক্টোবর ভোররাত থেকে ২৩ অক্টোবর দুপুর পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে তার মাছের ঘের। ভেসে বিভিন্ন প্রজাতির বিক্রিযোগ্য মাছ।
আলিফ এগ্রো অ্যান্ড ডেইরি ফার্ম নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি লক্ষ্যে মাছের ঘের দিয়ে শুরু করেছিলেন রাসেল আহমেদ রনি। দীর্ঘ পনের বছরের সকল উপার্জন দিয়েই করেন এ প্রজেক্ট। কিন্তু অতি বৃষ্টির কারণে ও জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে তার স্বপ্ন। সমতল ভূমি থেকে পাঁচ ফুট মাটির বাঁধের উপর তিন ফুট নেট জাল দিয়ে দেয়া বেড়াও তলিয়ে গেছে পানির নিচে।
রাসেল জানান, তার ঘেরে রুই, কাতলা, মৃগেলসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ ছিল। যার প্রতিটি মাছের ওজন দেড় থেকে দুই কেজি। যেহেতু শীতের মৌসুমে মাছের ওজন কম বৃদ্ধি হয়। সেকারণে সামনের দুই মাস পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার দিয়ে শীতের আগেই মাছগুলো বিক্রির ইচ্ছা ছিল তার।
রাসেলের প্রজেক্ট দেখে তার আশেপাশের গ্রামের অনেকেই ছোট আকারের মাছের ঘের শুরু করেছে। তাদের মাছও ভেসে গেছে ঘের তলিয়ে। আর রাসেলের যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয় বলছেন স্থানীয়রা।
পাথরঘাটা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু জানান, পাথরঘাটায় প্রায় পঞ্চাশটির মতো মৎস ঘের তলিয়ে গেছে। এতে কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা সুলতানা জানান, আমি বেশ কয়েকটি মাছের ঘের ও ফসলি জমি পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসককে অবহিত করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে যথাসম্ভব সহয়তা করা হবে।