গোলাম কিবরিয়া, বার্তা সম্পাদক : বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে। ইতোমধ্যেই গভীর সাগরে রওনা হয়েছেন অনেকেই। আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হলেই ট্রলারগুলোতে বাজার-সদায় আর বরফ ভর্তি করে তারা ছুটছেন মাছ ধরতে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে বরগুনা জেলাসহ আশপাশের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে থেমে থেমে ভারি বৃষ্টি এবং কালো মেঘ জমে আছে। সাগরও উত্তাল রয়েছে। জারি রয়েছে সতর্কতা সংকেতও।
এদিকে কর্মহীন দীর্ঘ সময় কাটানোর পর এই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় ইতোমধ্যেই জেলে-পাইকার আর আড়ৎদারের পদচারণায় মুখর বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্যবন্দরসহ বরগুনা সদর, বেতাগী, বামনা, আমতলী ও তালতলী উপজেলার জেলে অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকা। প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে জেলে পল্লীগুলোতেও।
এফবি মায়ের দোয়া নামের একটি ট্রলারের জেলে জামাল বলেন, ‘এমনিতেই করোনা মহামারি, তাই আর কোনো কামও করতে পারি না। বৌ-পোলাপান লইয়া কোনোরহম ধার দেনা কইরা চলছি এতদিন। এহন অবরোধ শেষ অইছে। তয় আবার আকাশের অবস্থা ভালো না। ভালো না সাগরের পরিস্থিতিও। আল্লায় যদি রহমত করে আর সাগরের পরিস্থিতি যদি ভালো থাহে তাইলে এইবার যদি কিছু পয়সার মুখ দেখতে পারি। বেশি কিছু চাই না, ধার দেনাডা শোধ করতে পারলেই অয়।’
জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি চৌধুরী গোলাম মোস্তফা জানান, অবরোধ শেষ হলেও এখন আবার সাগরে বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করছে। এই মুহূর্তে গভীর সাগরে যাওয়া ঠিক হবে কিনা এমন ভাবনায় জেলেদের অনেকেই সংশয়ে রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, করোনার কারণে অনেক জেলেই দীর্ঘ এ অবরোধের সময় বিকল্প কোনো কাজ পাননি। তাই অভাব অনটন আর রোগ শোক নিয়ে চরম এক দুবির্পাকে জীবন যাপন করতে হয়েছে তাদের।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য ঠিক রেখে বঙ্গোপসাগরে সহস্র প্রজাতির মৎস্য সম্পদের সুরক্ষায় ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল সরকার। এতে একদিকে যেমন জেলেদের জালে বেশি বেশি মাছ ধরা পড়বে তেমনি ভারসাম্য থাকবে গভীর সাগরের মৎস্য সম্পদেরও।