ব্রিজের বেহাল দশা, ভোগান্তিতে ৩০ হাজার মানুষ

পঁচা কোড়ালিয়া ব্রিজ

বরগুনার আমতলী-তালতলী উপজেলার সংযোগকারী পঁচাকোড়ালিয়া খালের আয়রন ব্রিজটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এটি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে ১০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীসহ দুই ইউনিয়নের ৩০ হাজার মানুষ। ব্রিজটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে ঘটে যেতে পাড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। ফলে জরুরী ভিত্তিতে ব্রিজটি সংস্কারের দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, আমতলী-তালতলী’র সীমান্তবর্তী পচাঁকোড়ালিয়া খালে ১৯৯৭ সালে দুই উপজেলার অন্তত ৩০ হাজার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য আয়রন ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। বরগুনা জেলা পরিষদের অর্থায়নে এ ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। অভিযোগ রয়েছে ১৮০ ফুট লম্বা ওই ব্রিজটি নির্মাণের সময় ঠিকাদার নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহার করেছেন। এতে দুই বছরের মাথায় ব্রিজটি নড়বড়ে হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। গত ২০১৪ সালে ব্রিজটির স্লিপার ভেঙে গেলে বিষয়টি স্থানীয়রা বরগুনা জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়নি। ফলে বর্তমানে এটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।

ওই ব্রিজটি দিয়ে পঁচাকোড়ালিয়া বাজার, ইউনিয়ন ভূমি অফিস, চরকগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চরকগাছিয়া রশিদিয়া হাফিজিয়া মাদরাসা, পাহলান বাড়ি নুরানি মাদরাসা, ড. মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম কলেজ, বাবুআলী দাখিল মাদরাসা, পঁচাকোড়ালিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খানকায় হুসাইনিয়া নুরানি ও হাফিজি মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ দুই উপজেলার অন্তত ৩০ হাজার মানুষ চলাচল করে। নড়বড়ে ও ভেঙ্গে যাওয়া ব্রিজটি দিয়ে শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে প্রায়ই বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এছাড়া ব্রিজ দিয়ে ছোট ও মাঝারি যানবাহন চলাচল করতে না পারায় বিপাকে পড়েছে অটোবাইক, মোটরসাইকেল, টেম্পো, রিকশা ও ভ্যান চালকসহ অভ্যন্তরীণ রুটের বাহনের যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা।

বুধবার (৪ নভেম্বর) সরেজমিনে দেখা গেছে, সিমেন্টের ঢালাই দেয়া স্লিপারগুলোর বেশির ভাগই ভেঙে পড়েছে। ক্রোস অ্যাঙ্গেলগুলো মরিচা ধরে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা স্লিপারের উপরে বাঁশ বেঁধে দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল আজিজ হাওলাদার ও নুরুল হক সরদার বলেন, দুই ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী হওয়ায় স্থানীয় কোন জনপ্রতিনিধি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছেন না।

চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদিয়া বলল, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাঙ্গা ব্রিজ পাড় হয়ে বিদ্যালয়ে আসতে যেতে হয়। একই কথা বলল নাজমুল, কবির, ছগির ও আসমাসহ অনেক শিক্ষার্থী। তাদের দাবী দ্রুত ব্রিজটি সংস্কার করা হোক।

আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আহম্মদ আলী বলেন, আয়রন ব্রিজের প্রকল্পের মধ্যে ওই ব্রিজটি অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

বরগুনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো: দেলোয়ার হোসেন বলেন, খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত ব্রিজটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *