‌’ও মারা যাওয়ার পর আমি নুডলস খেতে পারি না’

গোলাম কিবরিয়া : আসছে জুনের ২৬ তারিখে এক বছর পূর্ণ হবে বরগুনার আলোচিত রিফাত হত্যাকাণ্ডের। কিন্তু একমাত্র ছেলে শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফকে হারিয়ে পরিবারটি এখনো শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি। হয়তো স্বজন হারানোর বেদনা এ জীবনে শেষ হবে না। একমাত্র ছেলেকে ছাড়াই প্রথম ঈদ উদযাপন করছে তার পরিবার। ঈদ অর্থ আনন্দ হলেও রিফাতের পরিবারের কাছে এই অর্থ শুধু্ কাগজে কলমেই। কারণ জীবনে আরো হয়তো ঈদ পাওয়া যাবে। কিন্তু কোনো ঈদেই ভাইকে পাবে না ছোট বোন মৌ।

গত বছর ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজ রোডে স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আলোচিত এই হত্যাকান্ডের পরে স্ত্রী মিন্নিকেও আসামি করা হয়।

‘প্রত্যেক ঈদে রিফাত মা ও বাবাকে সালাম করে ঈদগাহে নামাজ পড়তে যেত। ফিরে এসে বোনকে নিয়ে প্রতিবেশীদের সাথে কুশলাদি বিনিময় করত। পাড়ার শিশুরা রিফাতকে অনেক পছন্দ করত। শিশুদের জন্য ওর পকেটে সব সময় চকলেট থাকত। আজ ঈদের দিন ওর মা সকালে কবরের কাছে গিয়ে কান্নাকাটি করেছে। দোয়া করেছে রিফাতের বিদেহী আত্মার মাগফিরাতের জন্য।’ – কথাগুলো অস্রু সিক্ত নয়নে বলছিলেন নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ।

বড় ভাইয়ের হাজারো স্মৃতি নিয়ে দিন কাটে ছোট বোনের। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মৌ। ‘ভাইয়া নামাজ পড়ে এসে আমার হাতে তৈরি করা নুডলস খেত। নুডলস ভাইয়ার খুব পছন্দ ছিল। ও মারা যাওয়ার পর থেকে আমি আর নুডলস খেতে পারি না, কান্না চলে আসে। ভাইয়া মারা যাওয়ার পর থেকে মা অসুস্থ, বাবার হার্টের অসুখ বেড়েছে। আমরা ভালো নেই।’

উল্লেখ্য, রিফাত হত্যার পর মূল অভিযুক্ত নয়ন বণ্ড পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। বাকি ২৪ আসামির বিরুদ্ধে দুটি চার্জশিট দেয় পুলিশ। বিচারিক কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে। মামলাটি রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *