----

করোনাকে অঙ্কুরে বিনাশ করার দুটি পথ

বরগুনা অনলাইন : অনুজীব বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের র‌্যাপিড ডট ব্লট কিট উদ্ভাবন দলের প্রধান বিজ্ঞানী। ১৯৯৯ সালে ছাগলের মড়ক ঠেকানোর জন্য পিপিআর ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করেছিলেন তিনি। ২০০২ সালে ডেঙ্গুর কুইক টেস্ট পদ্ধতির উদ্ভাবকও ড. বিজন। ২০০৩ সালে তিনি সার্স ভাইরাসের কুইক টেস্ট পদ্ধতির আবিষ্কার করেন। এটাও তার নামে প্যাটেন্ট করা।
বর্তমানের করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মূলত সার্স-২ ভাইরাস। সার্সের ভয়াবহতার কথা মনে করে মানুষ যেন আতঙ্কিত না হয় সেজন্য বিজ্ঞানীরা কোভিড-১৯ নামকরণ করেছিল।

প্রচারবিমুখ ড. বিজন কুমার শীল এক সাক্ষাৎকারে করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে কয়েকটি সহজ পদ্ধতি অনুসরণের কথা উল্লেখ করেছেন। তার সহজ ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো তুলে ধরা হলো :

ড. বিজন কুমার শীল বলেন, করোনাকে অঙ্কুরে বিনাশ করার দুটি পথ খোলা রয়েছে। একটি হচ্ছে, ভিটামিন সি জাতীয় খাবার পেয়ারা, লেবু, আমলকি অথবা ভিটামিন সি ট্যাবলেট খেতে হবে। এর সঙ্গে সম্ভব হলে প্রতিদিন রাতে একটি জিঙ্ক ট্যাবলেট খাবেন। ভিটামিন সি এবং জিংক শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সতেজ, সজীব রাখে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
আরেকটি হচ্ছে কেউ যদি আক্রান্ত হন, যেমন গলাব্যথা, শুকনো কফ ছাড়া কাশি, কাশি হবে কিন্তু কফ বের হবে না। এটা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রথম লক্ষণ। অন্য ইনফ্লুয়েঞ্জাতে আক্রান্তদের হাঁচি, সর্দি ও নাক দিয়ে পানি পড়ে। তবে করোনা ভাইরাস শুকনো কাশি দিয়ে শুরু হয়।

এক্ষেত্রে সহজ পদ্ধতি হচ্ছে বেশি কড়া না হালকা রং চা বারবার খাওয়া, গরম পানি দিয়ে গারগেল করা। এর চেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে আদা, লবঙ্গ ও একটা গোলমরিচ পানি মিশিয়ে গরম করলে কালোমতো একটা রং হবে। এর সঙ্গে সামান্য মধু বা চিনি দিয়ে চায়ের সঙ্গে খেলে অথবা এই পানি দিয়ে গারগল করতে হবে। এর ফলে গলায় যে ভাইরাসগুলো থাকে সেগুলো মারা যায়। এছাড়াও গলায় গরম লাগার ফলে রক্তপ্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে। রং চায়ের এন্টিসেপ্টিক গুণও রয়েছে। বারবার শুকনো কাশির ফলে গলার টিস্যু ফেটে যেতে পারে। চা এই ইনফেকশন রোধ করে।

আপনার জ্বর হোক বা না হোক, এই মুহূর্তে আমাদের সবার উচিত সকালে ঘুম থেকে উঠে, দুপুরে এবং সন্ধ্যায় গারগল করা। এর ফলে শরীরে যদি ভাইরাস ঢোকেও তাহলে সেটা আর বাড়তে পারবে না। এটা শুধু করোনা ভাইরাস না আরও অনেক ইনফেকশনকে রোধ করতে পারে। কেউ যদি এটা প্রতিদিন করতে পারে, তাহলে তার আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা খুবই কম।
করোনা ভাইরাসের কারণে যদি কখনও কারও পেটের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে নিমপাতা বেটে সবুজ রসের সঙ্গে এক চামচ হলুদের গুঁড়া পানির সঙ্গে মিশিয়ে সকালে এবং রাতে খেলে তার পেটের ইনফেকশন কমে যাবে। এসময় এমন রোগীকে এন্টিবায়োটিক খাওয়ালে অনেক সমস্যা হয়।

করোনা ভাইরাসের এই দুর্যোগকালেও যাদের বাইরে কাজ করতে হয়, যেমন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী, সাংবাদিক, স্বেচ্ছাসেবীসহ অন্যদের করণীয় সম্বন্ধে ড. বিজন কুমার শীল বলেন, করোনা ভাইরাস শরীরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই তো আর আক্রমণ করে না। সময় নিয়ে আসতে আসতে শরীরের মধ্যে বাড়তে থাকে। এক্ষেত্রে বাসায় ফিরে গরম পানি পান করা, এক কাপ হালকা রং চা খাওয়া, নাক ও মুখ দিয়ে গরম পানির ভাপ নেয়া, পানির মধ্যে এক ফোঁটা মেন্থল দিলে আরও ভালো হয়। তাহলে নাকটা আরও ভালোমতো পরিষ্কার হয়ে যাবে, ফলে ভাইরাস ঢুকলেও শরীরের মধ্যে বাড়তে এবং সুবিধা করতে পারবে না।

বাংলানিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *