গোলাম কিবরিয়া, বার্তা সম্পাদক : বরগুনার আমতলী উপজেলার কাউনিয়া ইব্রাহীম একাডেমির মেয়াদউত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি মজিবর রহমানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সেলুনা বেগম। শনিবার (৩১ অক্টোবর) বেলা ১২টায় বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সম্মেলন কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান শিক্ষিকা সেলুনা বেগম লিখিত বক্তব্যে বলেন, গতবছর ৯ সেপ্টেম্বর ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার ৮০ দিন আগেই বিধি মােতাবেক ভােটার তালিকাসহ নির্বাচনী তফসিল ঘােষণা করা হয়। অভিভাবক সদস্য পদে বিদ্যালয়ের মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি মজিবর রহমানের পক্ষে ৫ জন অভিভাবক মনােনয়নপত্র দাখিল করেন। সভাপতি পদে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ফারুক গাজীর পক্ষে ৫ জন অভিভাবক সদস্য পদে মনােনয়ন পত্র দাখিল করে। মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি মজিবর রহমানের পক্ষের ২জন অভিভাবক মনােনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিলে তার সভাপতি হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এই ভয়ে তিনি হানিফ মীর নামক জনৈক অভিভাবক সাথে যােগসাজসের মাধ্যমে বরগুনা বিজ্ঞ আমতলী সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত রাখার আদেশ প্রদান করেন।
প্রধান শিক্ষিকা অভিযোগ করে বলেন- বিদ্যালয়ে ১ জন তৃতীয় শ্রেণীর, ১ জন ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীর ২টি পদ শুন্য হওয়ায় জনাব মজিবর উক্ত পদে নিয়ােগ দেয়ার প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমাকে চাপ প্রয়ােগ করতে থাকেন। যেহেতু তিনি মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সভপতি; বিধি মােতাবেক নিয়ােগ দানের তার কোনো ক্ষমতা নেই।
সেলুনা বেগম আরও বলেন, এই বিধিবহির্ভূত নিয়ােগ দানে আমি অস্বীকৃতি জানালে তিনি আমার উপর বিভিন্ন মামলা এবং চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেন। আমি জেলা শিক্ষা অফিসার মহােদয়ের কাছে গেলে তিনি আমাকে জি.পি মহােদয়ের আইনি মতামত নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বাের্ড বরিশাল বিদ্যালয় পরিদর্শক মহােদয়ের নিকট যেতে বলেন। আমি জি.পি মহোদয়ের আইনি মতামত নিয়ে বিদ্যালয় পরিদর্শক মহােদয়ের নিকট যাই। জি.পি মহােদয়ের আইনি মতামতে কমিটি এবং নিয়ােগ অবৈধ বলেন এবং এডহক কমিটি গঠনের পরামর্শ দান করেন।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয় পরিদর্শক বাের্ডের আইন উপদেষ্টার মতামত নিয়ে আমাকে এডহক কমিটি গঠন করার আবেদন করার অবহিতকরণ চিঠি প্রদান করেন। আমি চিঠি অনুযায়ী এডহক কমিটি গঠনের অনুমতি পাওয়ার আবেদন করি। বিদ্যালয় পরিদর্শক মহোদয় এডহক কমিটি গঠনের অনুমতিপত্র অনলাইনে প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি জনাব মজিবর রহমানের নিকট অবহিত করলে তিনি অত্যন্ত রাগান্নিত হন এবং আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানােয়াট অভিযােগ এনে বে-আইনিভাবে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এবং আমার অফিসকক্ষে মেয়াদোত্তীর্ণ মজিবর রহমান এবং সহকারী শিক্ষক শাহানাজ পারভীন আমার কক্ষে লাগানাে তালার উপর আরেকটি তালা মেরে রাখে।
এ বিষয়ে আমতলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা আছে। যার নং-৯৩০। মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি জনাব মজিবর রহমান হানিফ মীরের যােগসাজসে একটি মামলা দায়ের করেন মজিবর রহমান এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহানাজ পারভীন।
আমার অফিস কক্ষের তালা ভেঙ্গে কক্ষে প্রবেশ করে প্রয়ােজনীয় কাগজপত্র নিয়ে অন্য তালা মেরে রাখে।
এ ব্যাপারে আমতলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। যার নম্বর-২৬৩।
মজিবর রহমান ও সহকারী প্রধান শিক্ষিকা শাহানাজ পারভীনের সাথে যােগসাজসে আমার নামে আরাে একটি মিথ্যা, বানােয়াট ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করেন। মেয়াদ উৰ্ত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি মজিবর রহমান বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান
এবং অত্যন্ত প্রভাবশালী লােক। তিনি আমাকে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের নানা রকম হুমকি দিচ্ছে। আমাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন ও চাকুরিচ্যুত করার জন্য নানা রকম পরিকল্পনা করছে।
এমন অবস্থায় আইনগত প্রতিকার,চাকুরিচ্যুত করা ও মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা থেকে পরিত্রাণ পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা সেলুনা বেগম।