গোলাম কিবরিয়া, বরগুনা অনলাইন : বরগুনায় সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হৃদয়ের এসএসসির ফল প্রকাশ হয়েছে। সে বরগুনার টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট থেকে এসএসসিতে জিপিএ ৪.১১ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
হৃদয়ের মা ফিরোজা বেগম ছেলের রেজাল্টের কথা শুনতে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলতে থাকেন, হৃদয়ের এই রেজাল্ট দিয়ে আমি এখন কী করব? আমি কি আমার ছেলেকে কখনও ফিরে পাবো?
তিনি বলেন, তাদের একমাত্র ছেলে হৃদয় লেখাপড়া শেষ করে একজন ইঞ্জিনিয়ার হতে চেয়েছিলো। হৃদয়ের বাবা দরিদ্র দেলোয়ার হোসেন একজন রিকশাচালক। তারা বরগুনার চরকলোনী এলাকার চাঁদশী সড়কের একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। তাদের গ্রামের বাড়ি বুড়িরচর ইউনিয়নের লবনগোলা গ্রামে।
বরগুনার টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট-এর প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন বলেন, খুব ভালো ছাত্র না হলেও খারাপ ছাত্র ছিল না হৃদয়। আমাদেরও প্রত্যাশা ছিল সে অন্তত জিপিএ ৪ পাবে। কিন্তু তার থেকেও সে বেশি পেয়েছে। সে জিপিএ ৪.১১ পেয়েছে। এত কিশোর বয়সে এমন নির্মম মৃত্যু আসলে মেনে নেয়া যায় না। তিনি আরও বলেন, হৃদয়ের জন্য পুরো স্কুলের সকল শিক্ষার্থী আজ শোকাহত।
প্রসঙ্গত, বরগুনায় গত ২৫ মে সোমবার ঈদের দিন বিকালে পায়রা নদীর পাড়ে গোলবুনিয়া এলাকায় ঘুরতে গেলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হৃদয়কে গুরুতর আহত করে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে তার অবস্থার অবনতি হলে বরিশাল-শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে পরের দিন ২৬ মে মঙ্গলবার সকালে তার মৃত্যু হয়। কিশোর হৃদয়ের ওপর ২০ থেকে ২৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দলের নির্মম এ হামলার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
এ ঘটনায় গত ২৬ মে মঙ্গলবার রাতে নিহত হৃদয়ের মা ফিরোজা বেগম ২০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১৪ থেকে ১৫ জনের বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।