গোলাম কিবরিয়া,বরগুনা অনলাইন : বরগুনার বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় আসামিদের সাফাই সাক্ষ্য দেয়ার কথা থাকলেও মাত্র একজন আসামি নিজেই সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন আদালতে। অন্য আসামিরা সাফাই সাক্ষ্য দিতে চাইলেও তাদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্যের তালিকা দিতে পারেনি আদালতে । আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সাফাই সাক্ষ্য দেয়ার জন্য আবারও সময় চাইলে বিচারক সময় আবেদন নাকচ করে আগামী ২৬ আগস্ট যুক্তিতর্কের জন্য দিন ধার্য করেছেন।
সোমবার সকালে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জুমানের আদালতে প্রাপ্তবয়ষ্ক আসামিদের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। এসময় জামিনে থাকা মিন্নি ও বরগুনা কারাগার থেকে রিফাত ফরাজিসহ ৮ আসামিকে পুলিশ পাহারায় আদালতে হাজির করা হয়। আসামি মুছা মামলার শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন।
পিপি অ্যাডভোকেট ভুবন চন্দ্র হাওলাদার বলেন, আসামিরা সাফাই সাক্ষ্য দেয়ার জন্য আদালতে তালিকা দাখিল করার কথা ছিল। কোন আসামি সাফাই সাক্ষীর তালিকা আদালতে দাখিল করতে পারেনি। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সাফাই সাক্ষ্য দেয়ার জন্য সময় প্রার্থনা করলে আদালত তা নাচক করে দেয়। আসামি কামরুল আহসান সায়মুন নিজে তার পক্ষে আদালতে সাফাই সাক্ষ্য দিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। পিপি বলেন- তাকে আমি জেরা করেছি। এছাড়া কামরুল আহসান সায়মুন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দোষ স্বীকার করে জবাববন্দি দিয়েছে। দিবালোকে কুপিয়ে রিফাত শরীফকে আসামিরা হত্যা করেছে। এ কারণে আসামিদের পক্ষে হয়তো কেউ সাফাই সাক্ষ্য দিতে চায় না।
পিপি অ্যাডভোকেট ভুবন চন্দ্র হাওলাদার আরো বলেন- আগামী ২৬ আগষ্ট রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক শুরু করবে। রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হলে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক শুরু করবেন।
এ বিষয়ে আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী বলেন, আসামী মিন্নি ও হাচান সাফাই সাক্ষ্য দিবে না। আমরা আদালতে আগেই জানিয়ে দিয়েছি। আমরা ন্যায়বিচার চাই। এই মামলায় মিন্নি সাক্ষী ছিল। তাকে অন্যায়ভাবে আসামি করা হয়েছে। মিন্নি ছিল প্রত্যক্ষ সাক্ষী। মিন্নি সম্পূর্ণ নির্দোষ।
উল্লেখ্য, রিফাত হত্যা মামলায় মোট ২৪ জনকে আসামি করে দুটি ভাগে গত বছরে ১ সেপ্টম্বর চার্জশিট দেয় পুলিশ। এর মধ্যে ১০জন প্রাপ্তবয়স্ক ও ১৪ জন শিশু আসামি। মামলায় প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মিন্নি ও শিশু আসামিদের মোট আটজন জামিনে রয়েছে।
গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে যখম করে নয়ন বন্ডের গড়া কিশোর গ্যাঙ বন্ড গ্রুপ। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়।