----

চাঁদাবাজি: যুবলীগ নেতাকে পুলিশের শাসানোর ভিডিও ভাইরাল

যুবলীগ নেতাকে পুলিশের শাসানোর ভিডিও

বরগুনা অনলাইন : বরগুনায় তরমুজ চাষীদের জিম্মি করে চাঁদাবাজি করায় এক যুবলীগ নেতাকে কড়া ভাষায় শাসিয়েছেন বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শাহজাহান হোসেন। শাসিয়ে সতর্ক করার সেই কথা-বার্তার ভিডিও এলাকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ কর্মকর্তার প্রশংসা করছেন এলাকাবাসী।

চাঁদা আদায়ের মৌখিক অভিযোগসহ অযাচিত হস্তক্ষেপের তথ্য পেয়ে শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) তরমুজ চাষীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন তিনি। এ সময় অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হলে তাকে সতর্ক করে দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

অভিযুক্ত ওই যুবলীগ নেতার নাম আব্দুল হালিম। তিনি বরগুনা সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ সেলিমের ভাই এবং ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক। শুক্রবার বিকেলে এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের বানাই কলেজ মাঠে ওই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে সহকারী পুলিশ সুপার আক্কাস আলী, বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবির মোহাম্মদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নে প্রতি বছর ব্যাপক তরমুজ চাষ হয়। এই তরমুজ চাষিদের মাঝে অযাচিত হস্তক্ষেপসহ তাদেরকে জিম্মি করে চাঁদা আদায় এবং নির্দিষ্ট শ্রমিক ও পরিবহন ব্যবহারে বাধ্য করে স্থানীয় একটি চক্র। মোবাইল ফোনে এমন তথ্য পেয়ে শুক্রবার তরমুজ চাষীদের কাছে গিয়ে মতবিনিময় সভা করেন বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শাহজাহান হোসেন।

তরমুজ চাষিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সেখানে উপস্থিত হন চক্রটির প্রধান স্থানীয় যুবলীগ নেতা আব্দুল হালিম। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান হোসেন চক্রটির প্রধান আবদুল হালিমকে কড়াভাবে সতর্ক করে দেন এবং এ ধরনের কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত হলে আইন প্রয়োগ করে কঠোরভাবে দমন করা হবে বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি।

স্থানীয় প্রভাবশালী ওই যুবলীগ নেতার উদ্দেশ্যে বলা সেই সতর্কবাণী ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেছে। পুলিশ কর্মকর্তার স্পষ্ট বক্তব্যের জন্য তাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন হাজার হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক তরমুজ চাষী জানান, প্রতি বছর তরমুজ বিক্রির মৌসুমে হালিম তার সহযোগীদের নিয়ে আমাদের নানাভাবে হয়রানি করেন। এ কারণে এর আগেও হালিমের নামে চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে এবং তিনি গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন।

এ বিষয়ে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শাহজাহান হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় কয়েকজন ভুক্তভোগী মোবাইল ফোনে হালিমের বিষয়ে আমার কাছে অভিযোগ করেন। এরপর আমি তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করি। মোবাইল ফোনে যেসব চাষীরা আমার কাছে হালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন- মতবিনিময় সভায় তারা হালিমের বিষয়ে কথা বলতে ভয় পাচ্ছিলেন। এটা আমি বুঝতে পারি। তাই প্রথমে হালিমকে আমি কৃষকদের মাঝে অযাচিত হস্তক্ষেপ থেকে সরে আসার অনুরোধ জানাই। তিনি যদি সরে না আসেন তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানিয়ে আমি তাকে সতর্ক করে দেই।’

রাইজিং বিডি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *