শিশুর মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে

বন্দীসময় : শিশুর মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে করণীয়

বরগুনা অনলাইন : করোনা সংক্রমণের কারণে স্কুল বন্ধ। এদিকে বাইরেও যাওয়া যাচ্ছে না। লকডাউনে ঘরে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে উঠেছে অনেক শিশু। কারো কারো অনলাইন ক্লাস চললেও অনেকেরই সেই সুযোগ নেই। যেহেতু শিশুরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের ওপর নির্ভরশীল এ কারণে এই সময় শিশুর মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে বাবা-মাকেই তাদেরকে সহযোগিতা করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই সময় তাদের শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি বজায় রাখতে কিছু বিষয় অনুসরণ করতে পারেন। যেমন-

  • শিশুদের সুস্থতা নিশ্চিত করতে তাদের নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খেতে দিন।
  • শিশুর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলুন।
  • একাধিক সন্তান থাকলে প্রতিটি সন্তানই যে আপনার কাছে বিশেষ, এটা তাকে বুঝিয়ে দিন।
  • শিশুর সঙ্গে কথা বলুন। তাকে নিয়ে বই পড়ুন। তাকে নিয়ে গান গাইতে বা শুনতে পারেন।
  • কিছু কাজ তাকে একা একা করতে দিন। তাকে খেলাধুলা করতে উৎসাহিত করুন।
  • শিশুর ঘুমের একটা রুটিন তৈরি করুন। যাতে সে একটা নির্দিষ্ট সময় ঘুমায় ও ওঠে সেটা নিশ্চিত করুন।
  • শিশুকে একটা শৃঙ্খলিত জীবনযাপন করতে উৎসাহিত করুন।
  • শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকলে শিশুর মনোযোগ, চিন্তা করার ক্ষমতা, ভাষা শেখা ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়বে। সেজন্য দিনে ১৫ মিনিট ব্যায়াম করলেও তার উপকার হবে।
  • বিভিন্ন ধরনের বোর্ড গেম শিশুদের মনোযোগ, একাগ্রতা বাড়ায়। সেই সঙ্গে হতাশা দূর করতে সাহায্য করে। পারলে ঘরে এ ধরনের খেলার আয়োজন করুন।
  • শিশুদের সঙ্গে প্রতিদিন তার দিনের কাজ নিয়ে কথা বলুন। এতে তার যোগাযোগের দক্ষতা তৈরি হবে।
  • শিশুদের ভাবনা, কথা শেয়ার করার সুযোগ দিন। একসঙ্গে পরিবারের সবাই খেতে বসে তাদের কথা শুনুন।
  • শিশুদের আঁকাআকিতে উৎসাহ দিন। পারলে রঙিন কাগজ এনে তাদেরকে ঘর সাজাতে অনুপ্রাণিত করুন। ঘরে গাছ লাগানোর সুযোগ থাকলে তাতেও শিশুদের যুক্ত করুন। এতে তাদের সৃজনশীল কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়বে।
  • বয়স অনুযায়ী শিশুদের স্ক্রিন দেখার সময় সীমিত করুন।
  • বয়সভেদে শিশুদের নানারকম মুভি দেখা, ভিডিও গেম দেখতে সহযোগিতা করুন। এতেও তাদের মস্তিষ্ক উন্নত হবে।

মস্তিষ্ক শরীরের একটি বড় অঙ্গ। এর মাধ্যমেই সব কাজ নিয়ন্ত্রিত হয়। তবে কিছু অভ্যাস রয়েছে যেগুলো মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে দিয়ে এর ক্ষতির কারণ হয়। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ ডাইজেস্ট জানিয়েছে মস্তিষ্কের ক্ষতি করে এমন কিছু অভ্যাসের কথা।

  • সকালের নাশতা না খাওয়া । যাঁরা সকালবেলার নাশতা খান না, তাঁদের রক্তের শর্করা কমে যায়। এতে মস্তিষ্কে পুষ্টি কম পৌঁছায় এবং মস্তিষ্ক শক্তি পায় না।
  • বেশি খাওয়া : বেশি খাওয়া মস্তিষ্কের আর্টারিকে শক্ত করে দেয়। এতে মস্তিষ্কের শক্তি কমে যায়।
  • বেশি চিনি খাওয়া : বেশি চিনি খাওয়া প্রোটিন এবং পুষ্টির শোষণকে প্রভাবিত করে। এর কারণে অপুষ্টির সমস্যা হয়। এটি মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধিতে বাধা দেয়।
  • বায়ুদূষণ : শরীরের মধ্যে মস্তিষ্কই হলো অক্সিজেন গ্রহণ করার সবচেয়ে বড় ভোক্তা। দূষণযুক্ত বায়ু মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ ব্যাহত করে। এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়।
  • ঘুমের সমস্যা : ঘুমালে মস্তিষ্ক বিশ্রাম পায়। তাই শিশুর পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।
  • ঘুমের সময় মাথা ঢাকবেন না। অনেকেরই অভ্যাস রয়েছে শিশুর মাথা ঢেকে ঘুম পড়ানোর। তবে এতে কার্বন ডাই-অক্সাইড বৃদ্ধি পায় এবং অক্সিজেনের ঘাটতি হয়। এটি মস্তিষ্কের ক্ষতি করে।

বন্দী এই সময়ে শিশুর মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে শিশুকে হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করুন। তার সাথে কথা বলুন। তাকে পর্যাপ্ত সময় দিন। বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে তাকে সহযোগিতা করার আপনার কর্তব্য।

সূত্র : সমকাল ও এনটিভি

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *