গোলাম কিবরিয়া,বার্তা সম্পাদক : বরগুনার বহুল আলোচিত শাহ নেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শেষ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমানের আদালতে যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
ধার্য তারিখ থাকায় বরগুনা কারাগারের শিশু ইউনিট থেকে ৬ আসামি আদালতে হাজির করা হয়। তারা হলো, রাশেদুল হাসার রিশান ফরাজি, অলি উল্লাহ অলি, তানভির হোসেন, রাকিবুল হাসার রিফাত হাওলাদার, আবদুল্লাহ রায়হান ও নাঈম। একই সঙ্গে জামিনে থাকা ৮ আসামি আদালতে হাজির হন। তারা হল, জয় চন্দ্র সরকার চন্দন, নাজমুল হাসান, রাতুল সিকদার জয়, মারুফ বিল্লাহ, রাকিবুল হাসান নিয়ামত, সাইয়েদ মারুফ বিল্লাহ, প্রিন্স মোল্লা ও আরিয়ান হোসেন শ্রাবন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক সোমবার উপস্থাপন শুরু করেন। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক শেষ করেছেন।
শিশু আদালতের বিশেষ পিপি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, শিশু আদালতে ৭৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাতজন আসামি ম্যাজিষ্ট্রটের কাছে দোষ স্বীকারোক্তিমুলক জবান বন্দি দিয়েছেন। আমি দুইদিনে বাদীর মামলা, আসামিদের দোষ স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি ও যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন সেগুলো আদালতে উপস্থাপন করেছি। আসামিপক্ষের আইনজীবারা বুধবার হতে তাদের যুক্তি উপস্থাপন করার পরে আমি তার উত্তর দেব।
আসামি আরিয়ান হোসেন শ্রাবনের আইনজীবী মো. শাহজাহান বলেন, বুধবার থেকে আমি যুক্তিতর্ক শুরু করবো। আমি আশাবাদি আমার আসামী নির্দোষ প্রমাণিত হবে। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি শিশু আদালতের বিচারক মো: হাফিজুর রহমান অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
এর আগে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক ২৪ জনের নামে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে দাখিল করে তদন্তকারী কর্মকর্তা। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জন। অপর দিকে ৩০ সেপ্টেম্বর এই আলোচিত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ছয় জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো: আছাদুজ্জামান। এ মামলায় অপর চার আসামির অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস দিয়েছেন । দণ্ডপ্রাপ্তরা বর্তমানে বরগুনা জেলা কারাগারে রয়েছেন ।
উল্লেখ্য, বছরের ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে তাঁর স্ত্রী মিন্নির সামনে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে নয়ন বন্ড ও তার সহযোগিরা। পরে রিফাত শরীফকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর ওই দিন বিকেলে মারা যায়। পরদিন ২৭ জুন নিহত রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে বরগুনা থানায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।