গোলাম কিবরিয়া,বরগুনা: বরগুনায় শ্যালকের বউকে অপহরণ মামলায় দুলাভাইকে ২০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া অপর সাতজনকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিন মাস বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার সকালে ওই ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো: হাফিজুর রহমান এই রায় প্রদান করেন। ট্রাইব্যুনালের এপিপি আশ্রাফুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রায় ঘোষণার সময় ৭ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আসামী মিরাজ পলাতক রয়েছে ।
আদালতের সহকারী পিপি জানান, বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার ছোট টেংরা গ্রামের নুরুল হকের ছেলে জাকির হাচান ওই ট্রাইব্যুনালে ২০১২ সালের ১৭ মে আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। আসামিরা হলেন, বড় টেংরা গ্রামের মতিয়ার রহমান সরদারের ছেলে বাদীর দুলাভাই শাহ আলম (৪৫), শাহ আলমের সহযোগী আউয়াল গাজীর ছেলে আজিজুল হক হানিফ গাজী (৪৭), এনছান জোমাদ্দারের ছেলে হারুণ জোমাদ্দার(৪৬), আবুল কালামের ছেলে রাসেল (৩০), হাবিব সরদারের ছেলে মিরাজ (৩৭), তানজের আলীর ছেলে আবুল কালাম (৪০), হোসেন আলীর ছেলে হাফিজুর রহমান (৪০) ও ইউসুফ আকনের ছেলে ওচমান ( ৩৮)।
জাকির হাচান ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করেন, তার স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে তাঁর দুলাভাই শাহ আলম ও সহযোগীরা ওই বছরের ১০ মে বাদীর বাড়ির সামনে থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ফাতেমা বেগমকে তাঁর স্বামী কোথাও না পেয়ে ট্রাইব্যুনালে ওই ৮ জন আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা পাথরঘাটা থানার এস আই আবদুস সত্তার ওই বছরের ৩০ আগষ্ট আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
বাদী বলেন, আমার দুলাভাই শাহ আলম আমার স্ত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। আমার স্ত্রীকে দিয়ে আমাকে তালাক দিয়ে দুলাভাই বিয়ে করে। সেই ঘরে দুইটি সন্তানও হয়েছে।
আদালতের বারান্দায় শাহ আলম বলেন, ফাতেমা স্বেচ্ছায় আমার সঙ্গে গিয়েছে। আমরা এখন স্বামী স্ত্রী। আমাদের দুইটি সন্তান আছে। বাদীও মামলায় সঠিকভাবে সাক্ষ্য দেয়নি। আমাদের অন্যায়ভাবে সাজা দেয়া হয়েছে। আমরা হাইকোর্টে আপিল করব।
ওই ট্রাইব্যুনালের এ পিপি আশ্রাফুল আলম বলেন, এটি যুগান্তরকারী রায়। দুলাভাই হয়ে শ্যালকের সুন্দরী বউকে অপহরণ করে বিয়ে করেছে। এই রায় পড়ে অন্যরা শিখবে। অপরাধ করলে শাস্তি পেতে হয়।