ভালোবেসে বিয়ের পর কিশোরী স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী গ্রেপ্তার

গোলাম কিবরিয়া, বরগুনা : বরগুনায় ভালোবেসে বিয়ের ছয়মাস যেতে না যেতেই শ্বশুরবাড়িতে কিশোরী স্ত্রীকে হত্যা করে তার লাশ ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায় স্বামী। শুক্রবার সকালে বরগুনা সদর ইউনিয়নের কালিরতবক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার হয় স্বামী ইয়াছিন (২৩)।

গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে এ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন ইয়াছিন। ইয়াছিন বরগুনা সদর উপজেলার ধুপতি-সুজার খেয়া এলাকার আবু সালেহ মুসুল্লীর ছেলে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। নিহত স্ত্রীর নাম স্বর্ণা (১৬)। নিহত স্বর্ণা কালিরতবক এলাকার চায়ের দোকানদার আনোয়ার খাঁয়ের মেয়ে।

বরগুনা থানার ওসি কে এম তারিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধারের পর সুরোতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। একইসাথে মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে বরগুনার কেজিস্কুল সড়কের একটি বাড়ি থেকে ইয়াছিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী স্বর্ণাকে হত্যার পর ওরনা দিয়ে ঝুলিয়ে রাখার কথা স্বীকার করেছে গ্রেপ্তারকৃত ইয়াছিন।

এ সময় তিনি আরও বলেন, স্ত্রী স্বর্নাকে হত্যার পর তার লাশ ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যাওয়ার পর ইয়াছিন তার শাশুড়ির কাছে ফোন দিয়ে স্বর্ণার কিছু হয়েছে কি না তা দেখার জন্য তাকে বাড়িতে যেতে বলেন।

স্বর্ণার মা মাহমুদা বেগমের (৪০) সাথে কথা বলে জানা যায়, স্বর্নার স্বামী ইয়াছিন গত তিন দিন ধরে তাদের বাড়িতেই ছিলেন। বেশিরভাগ সময়ই স্বর্ণা এবং ইয়াছিন ঘরেই থাকত। স্বর্ণার পিতা আনোয়ার খাঁ স্থানীয় কালিতবক স্লুইজ এলাকায় একটি চায়ের দোকান দিয়ে জীবীকা নির্বাহ করেন। স্বামী আনোয়ার খাঁর চায়ের দোকানেই কাজ করেন স্বর্ণার মা মাহমুদা বেগম। শুক্রবার সকালেও ইয়াছিন এবং স্বর্ণা একত্রেই তাদের ঘরে ছিল। সকাল ১১টার দিকে ইয়াছিন তার শাশুড়ি মাহমুদা বেগমের কাছে ফোনে জানায় যে, স্বর্ণাকে একাধিকবার ফোন দিলেও স্বর্ণা তা ধরছে না। তাই বাড়িতে গিয়ে স্বর্ণার কিছু হয়েছে কিনা তা দেখতে শাশুড়ি মাহমুদাকে অনুরোধ জানায় ইয়াছিন। এসময় স্বর্ণার মা মাহমুদা তাদের ঘরে গিয়ে তার মেয়ে স্বর্ণার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।

স্বর্ণার মা মাহমুদা আরও জানান, ছয় থেকে সাত মাস আগে একে অপরকে পছন্দ করে পালিয়ে বিয়ে করেছিল স্বর্ণা ও ইয়াছিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *